• রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৬:০৩ পূর্বাহ্ন |
  • Bangla Version
নিউজ হেডলাইন :
করোনা শনাক্তের হার ১৫ শতাংশের বেশি, মৃত্যু ১ সুষ্ঠ ভোটে ডিজিটাল পদ্ধতি দরকার  অভয়নগরে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি বাস্তবায়ন ও মনিটরিং সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ অভয়নগরে সরকারীভাবে ধান চাল সংগ্রহের উদ্বোধন অভয়নগরে মেধা অন্বেষন ও কুইজ প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত অভয়নগরে দুদক কর্তৃক সততা স্টোরের অর্থ ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ আশুলিয়া টু চান্দুরা চৌরাস্তা যানজটের দুর্ভোগ,,,  অভয়নগরে মাধ্যমিক পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধানকে সংবর্ধনা যশোর গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)অভিযান চালিয়ে ৪ বোতল বিদেশী মদ উদ্ধার সহ আটক -১ অভয়নগরে পায়রাহাট ইউনাইটেড কলেজ শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্বীকৃতি অর্জনে আনন্দ শোভাযাত্রা নড়াইলের ইউপি চেয়ারম্যান  মোস্তফা কামাল’কে গুলি করে হত্যাকান্ডের ঘটনায় আটক -৪ সুষ্ঠ ভোটে ডিজিটাল পদ্ধতি দরকার আশুলিয়ায় ২৪ ঘণ্টায় ছয় জনের মরদেহ উদ্ধার ডিবি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যা বললেন মামুনুল হক যুক্তরাষ্ট্র সিরিজ খেলা হচ্ছে না তাসকিনের, বিকল্প ভাবনায় হাসান দুই সিনেমা নিয়ে ফিরছেন আফরান নিশো

চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম বাংলাদেশ

বিশেষ প্রতিনিধি হার্টের রিংয়ের দামের বৈষম্য নিরসনের দাবিতে সরবরাহকারী ব্যবসায়ীদের এক অংশের ডাকা ধর্মঘটে রাজধানীর হাসপাতালগুলোতে রিংয়ের সংকট দেখা দিয়েছে। সঠিক আকৃতির রিং না পাওয়ায় বিভিন্ন হাসপাতালের অস্ত্রোপচার কক্ষ থেকে রোগী ফিরিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।হৃদরোগের চিকিৎসায় দেশের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে গতকাল রোববার সকালে এক রোগীর এনজিওগ্রাম করার পর প্রয়োজনীয় রিং না পাওয়ায় অস্ত্রোপচার কক্ষ থেকে তাঁকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক চিকিৎসক বলেন, সিরাজগঞ্জ থেকে আসা রোগীর এনজিওগ্রাম করা হলে হার্টে ব্লক ধরা পড়ে। তবে তাঁর যে আকৃতির রিং প্রয়োজন, সরবরাহকারী তিন প্রতিষ্ঠানের কাছে সেই রিং পাওয়া যায়নি। তাই তাঁকে কয়েকদিন পর হাসপাতালে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।

হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে দৈনিক গড়ে ৩০ রোগীর হার্টে রিং পরানো হয়। গতকাল রিংয়ের জটিলতায় পাঁচ থেকে ছয়জনকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে । বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালেও এমন ঘটনার তথ্য পাওয়া গেছে। এই প্রতিষ্ঠানের হৃদরোগ বিভাগে দৈনিক গড়ে ১৫ রোগীর রিং পরানো হয়। তবে গতকাল দুই থেকে তিন রোগীকে ফিরে যেত হয়েছে। এমন পরিস্থিতি ঢাকা মেডিকেল কলেজ, হার্ট ফাউন্ডেশন ও ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালেও।ইউরোপীয় বিভিন্ন কোম্পানির রিং বিক্রি করে এমন প্রতিষ্ঠানগুলো দাম পুনর্নির্ধারণের দাবিতে সরবরাহ বন্ধ রেখেছে। যুক্তরাষ্ট্রের রিং বিক্রি করে এমন প্রতিষ্ঠানগুলো সরবরাহ অব্যাহত রেখেছে। তবে ইউরোপীয় কোম্পানিগুলো তৈরি করে এমন ৮ থেকে ১০ ধরনের আকৃতির রিং নেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে। হার্টের রিং আমদানির জন্য দেশে অনুমোদিত ২৭টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ১২ ডিসেম্বর ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এসব প্রতিষ্ঠানের আমদানি করা ৪৪ ধরনের রিংয়ের দাম পুনর্নির্ধারণ করে দিয়েছে। এতে রিংভেদে দাম কমেছে ২ হাজার থেকে ৫৬ হাজার টাকা পর্যন্ত। এরপর দামে বৈষম্যের অভিযোগ এনে ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোর রিং সরবরাহ গত শনিবার থেকে বন্ধ রাখা হয়েছে । তবে ওই দিন বিজয় দিবসের কারণে সরকারি হাসপাতাল বন্ধ থাকায় এর নেতিবাচক প্রভাব বোঝা যায়নি।

গতকাল রোববার ঢাকার সরকারি-বেসরকারি পাঁচটি হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অনেক রোগীর হার্টে রিং বসানো সম্ভব হয়নি। রিং না পাওয়ায় পূর্বনির্ধারিত অনেক অস্ত্রোপচার বাতিল হয়েছে।এদিকে নতুন করে ঔষধ প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া রিংয়ের মূল্যতালিকা হাসপাতালের নোটিশ বোর্ডে টানানো হয়নি। অনেক রোগীর স্বজন জানেনই না রিংয়ের দাম কমানো হয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন রোগী ও স্বজনরা। নিরুপায় হয়ে গুনতে হচ্ছে বেশি টাকা। ইউরোপীয় কোম্পানিগুলো রিং বিক্রি বন্ধ রাখায় যে রোগীর ৬৬ হাজার টাকার রিং বসানো সম্ভব হতো, সে ক্ষেত্রে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত লেগে যাচ্ছে। বাংলাদেশ মেডিকেল ডিভাইস ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশে মাসে সাড়ে ৩ হাজার রোগীর হার্টের রিং বসানো হলে ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোর ২ হাজারের মতো রিং সরবরাহ করা হয়। ইউরোপীয় রিং আমদানিকারকদের দাবি, বাংলাদেশে চাহিদার ৩৫ শতাংশ রিং আসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে, বাকি ৬৫ শতাংশ আসে অন্যান্য দেশ থেকে। তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের রিং হিসেবে যেগুলো পাওয়া যায়, সেগুলো অন্য দেশে তৈরি। তবে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর বলছে, দেশের বাজারের একটি বড় অংশ যুক্তরাষ্ট্রের রিং সরবরাহকারী তিন প্রতিষ্ঠানের দখলে। তাই এতে তেমন প্রভাব পড়ার কথা নয়। 

ইউরোপীয় রিং আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান এপিক টেকনোলজিসের মালিক ওয়াসিম আহমেদ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি কোম্পানিকে আইনকানুন মেনে দাম নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে কয়েক মাস আগে। কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে সরাসরি একটা মূল্য দেওয়া হলো।’ তিনি আরও বলেন, ‘১০ টাকা দিয়ে একটা রিং কেনা হলে অন্যান্য খরচসহ তার দাম হবে ১৪-১৫ টাকা। কিন্তু সেটির দাম ৭ টাকা নির্ধারণ করে দিচ্ছে। ঔষধ প্রশাসন মনে করছে, আমরা সিন্ডিকেট করে আন্দোলন করছি, দাম বাড়ানোর জন্য। কিন্তু বিষয়টি তা নয়।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ইউরোপীয় রিং আমদানিকারক বলেন, ‘বৈষম্য করে রিংয়ের দাম কমানো হয়েছে। এতে আমাদের ক্ষতি হবে। আমরা ঔষধ প্রশাসনে চিঠি দিয়েছি দাম পুনর্নির্ধারণের জন্য। এ দাবি না মানলে আমরা আদালতে যাব।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সবাইকে অনুরোধ করছি– এখন রিং ব্যবহার না করার জন্য। যে বৈষম্য হচ্ছে, সেটার সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত ব্যবহার না করার কথা বলছি।জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীর জামাল উদ্দিন বলেন, ‘স্টেন্ট (রিং) সরবরাহ ও ব্যবহার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্তে রিংয়ের বাজারে সংকট তৈরি হবে। যুক্তরাষ্ট্রের তিন কোম্পানির রিং দিয়ে কাজ চলছে। দাম বৈষম্য নিরসনে উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরকে উদ্যোগ নিতে হবে।’

বিএসএমএমইউর হৃদরোগ বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক চৌধুরী মেশকাত আহমেদ বলেন, ‘এতদিন তো ইউরোপীয় ও যুক্তরাষ্ট্রের রিংয়ে দামের তেমন পার্থক্য ছিল না। ইউরোপীয় রিংয়ের দাম ৩০-৩৫ হাজার টাকা করে কমেছে। এখন সেসব রোগীর সামর্থ্য কম থাকবে, তারা চাইলে ইউরোপীয় রিং দেওয়া হবে। গত দু’দিনে আমরা যত রিং পরিয়েছি সবই যুক্তরাষ্ট্রের, এমন অবস্থা চললে রোগীর ভোগান্তি বাড়বে।’ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের উপপরিচালক নুরুল আলম বলেন, ‘১৩ সদস্যের জাতীয় বিশেষজ্ঞ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। কমিটি যদি প্রয়োজন মনে করে তাহলে নতুন করে আলোচনার সুযোগ রয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞ কমিটি সময় নির্ধারণ করে মেডিকেল ডিভাইস ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন নিয়ে বসতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, এক কোম্পানি দেশভেদে ভিন্ন ভিন্ন দামে রিং বিক্রি করছে। যেমন ভারতে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করা রিং বাংলাদেশে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা নেওয়া হচ্ছে। আমরা এই দাম সমন্বয় করার চেষ্টা করেছি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.